"চেনা অচেনা স্বপ্ন "



আজ সকালে ঘুম থেকে উঠতে বড্ড দেরি হয়ে গেল, হাতে আর মিনিট দশেক।
ঘড়ির কাঁটাটা যেন দৌড়াচ্ছে, এবার খেয়েদেয়ে বেরিয়ে পড়তে হবে না হলে দেরি হয়ে যাবে।

রাস্তার এপারে দাঁড়িয়ে ছিলাম, ট্রাফিক লাইটসের সবুজ থেকে লাল হতে এখনও পনের সেকেন্ড বাকি; তখনি দেখলাম দুশো সতের নম্বর বাসটা চলে গেল, রাস্তার ওপার থেকে।

পরের বাসটা মিনিট পনেরো পর এল। উঠে দেখি বাসটা বেশ ফাঁকা ফাঁকা, অন্য দিনের তুলনায়। 
বাহ! জানলার ধারে একটা সিটও আছে, অন্য দিন তো অর্ধেক রাস্তা দাঁড়িয়ে যেতে হয়।
সিটে বসে ব্যাগ থেকে ফোন আর বাসের ভাড়াটা বার করতে না করতেই কন্ডাক্টর সামনে এসে দাঁড়াল। ভাড়াটা নিয়ে টিকিটটা হাতে এগিয়ে দিল।

ফোনে তখন সময় দশটা বাজতে দশ, বাসের গতিটা আসতে আসতে বাড়ছে। একটার পর একটা স্টপেজ এগিয়ে গেল আর যথারীতি পথযাত্রীদের ভিড় বাড়তে শুরু হল।

আমার সামনের সিটে দুই কাকিমা আজকের গরম আবহাওয়া আর খাবার দাবার নিয়ে গল্পতে মগ্ন।
ওইদিকে আমার ডান পাশে চারটে কাকু দিন-দিন জিনিস পত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার আলোচনায় ব্যস্ত।

সামনের দিকে কিছু ৭-৮ এ পরা ছাত্রছাত্রীরা দাঁড়িয়ে আছে, ওদের স্কুলের সময় হয়ে এসেছে । অন্য দিকে কচিকাঁচাদের স্কুলের ছুটি; এক গাল হাসি নিয়ে পুরো বাসে ওদের হইচই, কেউ মায়ের কাছে কেনাকাটার বায়না করছে, বা কেউ কেউ বন্ধুদের নিয়ে নালিশ।

দেখতে দেখতে প্রায় অনেকটা রাস্তা এগিয়ে এসেছি, যাই এবার নিজের জানলার ধারের সিটটা ছাড়তে হবে। জায়গাটা যদিও খালি থাকবে না অন্য কেউ ঠিক এসে বসবে।

সময় তখন দশটা পঁচিশ, হাতে আর পাঁচটা মিনিট বাকি, ক্লাস শুরু হয়ে যাবে আর বেশি দেরি করব না! এই ভেবেই কলেজের দিকে এগিয়ে গেলাম।

আজ একুশ সালের মে মাস, এই পুরো ঘটনাটা পৃথার ঘুম থেকে ওঠার আগেকার কথা, যেটা এখন এক চেনা অচেনা স্বপ্ন হয়ে রয়েছে। পৃথা এই আশাতেই আছে যে একদিন এটা বাস্তবে পরিবর্তিত হবে।

- শতরূপা উপাধ্যায়

Post a Comment

0 Comments